চরভদ্রাসনে আলোচিত কাউছার হত্যা মামলায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানিয়ে মানববন্ধন করেছে তার পরিবার ও স্থানীয় এলাকাবাসি।মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে চরভদ্রাসন পুরাতন ইউনিয়ন পরিষদের সামনে হতে শান্তিপূর্নভাবে পদযাত্রা করে উপজেলা পরিষদের সামনে গিয়ে এ মানববন্ধনে অংশ নেয় নানা শ্রেণী পেশার মানুষ। ঐ দিন উপজেলা পরিষদের সামনের প্রধান সড়কে বেলা ১১ টা হতে প্রায় অর্ধঘন্টা দাড়িয়ে এ মানববন্ধনে অংশ নেন প্রায় শতাধিক মানুষ।
এসময় কাউছার হত্যা মামলায় জড়িত গ্রেফতার হওয়া দুই আসামি সহ অজ্ঞাত অন্যান্য দুর্বৃত্তদের খুজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানান তারা।মানববন্ধনে স্বামী হত্যার বিচার চেয়ে কাউছরের স্ত্রী শারমিন আক্তার (২৬) বলেন গত ২৬ নভেম্বর আমার স্বামী খুন হয় এবং ২৭ নভেম্বর দুজন আসামিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। আসামীর বক্তব্যে আমার স্বামীর চরিত্রের উপর যে কালিমা লেপন করা হয়েছে তা মিথ্যা।আমার স্বামী একদিকে যেমন একজন আদর্শবান স্বামী ছিল তেমনি তার সন্তানদের কাছে ছিল একজন ভালো বাবা।আমি আমার স্বামী হত্যায় জড়িত সকলকে খুজে বের করে তাদের আইনের আওতায় এনে উপযুক্ত শাস্তি দাবী করছি।
ছেলে হত্যার বিচার চেয়ে কাউছরের মা কুলছুম বেগম(৭০)বলেন আমার মতন কোন মায়ের কোল যেন আর খালি না হয় আমি আমার ছেলে হত্যায় জড়িতদের ফাঁসি চাই।
কাউছরের ভাই লিয়াকত খান (৩৫) বলেন আমার ভাই খুনের ঘটনায় যে আসামীকে ধরা হয়েছে তার একার পক্ষে এই খুন করা সম্ভব নয়।এই খুনের সাথে আরো লোক জরিত রয়েছে বলে তার ধারনা।তিনি বলেন পুলিশ অভিযান চালিয়ে দুজন আসামিকে গ্রেফতার করেছে।পুলিশ আমাদের যথেষ্ট সহযোগীতা করছে।পুলিশ প্রশাসনের কাছে দাবী তারা যেন অজ্ঞাত অন্যান্য আসামীদের খুজে বের করে আইনের আওতায় এনে উপযুক্ত শাস্তি প্রদান করেন।
উল্লেখ্য গত ২৬ নভেম্বর শনিবার বেলা ১০টার দিকে উপজেলার চর হরিরামপুর ইউনিয়নের জাকেরেরশুরা ভাঙ্গার মাথা এলাকায় পদ্মানদীর পাড়ে বালুর স্তুপের উপর বালু ব্যাবসায়ী মোঃ কাউছার খান(৪১) এর রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করে চরভদ্রাসন থানা পুলিশ।পরে এই ঘটনায় নিহতের ভাই লিয়াকত বাদী হয়ে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
ঘটনার দিন শনিবার দিবাগত রাতে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যাবহার করে সদর ইউনিয়নের বিএসডাঙ্গী (হেলিপ্যাড) গ্রামে অভিযান চালিয়ে কাউছার হত্যায় জরিত দুই আসামি সাফাওয়াত ইসলাম সিফাত(১৬) ও তার পিতা মোঃ শাহীন মোল্যা(৫০)কে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠায় পুলিশ।
রবিবার ফরিদপুর জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সংবাদ সন্মেলন করে প্রেস ব্রিফিং দেন পুলিশ সুপার মোঃ শাহ্জাহান।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুমন রঞ্জন সরকার ও চরভদ্রাসন থানা পরিদর্ষক মিন্টু মন্ডল।আসামির দেওয়া তথ্য অনুসারে পুলিশ জানায় নিহত কাউছারের সাথে আসামি সিফাতের সমকামিতার সম্পর্ক ছিল।ঘটনার দিন তাকে মুঠোফোনে খবর দিয়ে বলাৎকার করার উদ্দ্যেশে ঐ স্থানে নিয়ে যায় কাউছার।এতে সিফাথ রাজি না হওয়ায় দুজনের মধ্যে বাক বিতন্ডার এক পর্যায়ে ব্যাবসায়ী কাউছারের গলায় চাকু দিয়ে আঘাত করলে সে বালুর ভিতরে পরে যায়।পরে সিফাত তার পিঠের উপর বসে তার গলা ও ঘারে উপর্যপুরি আঘাত করে তার মৃত্যু নিশ্চিত করে এবং কাউছারের মোটর সাইকেল, মোবাইল ফোন ও চাকু নিয়ে পালিয়ে যায় সিফাত। পরে অভিযান চালিয়ে আসামির কাছ থেকে পুলিশ মোটর সাইকেল,পোষাকাদি,চাকু ও আগুনে পুড়িয়ে ফেলা মোবাইলের যন্ত্রাংশ উদ্ধার করেন